আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা / একুশে ফেব্রুয়ারি রচনা অনুচ্ছেদ, প্রবন্ধ ও প্রতিবেদন (International Mother Language Day Paragraph and Essay In Bengali With PDF)
২১ শে ফেব্রুয়ারির এই গৌরবময় দিনটি বর্তমানে শুধু মাত্র বাংলাদেশ অথবা পশ্চিবঙ্গের মধ্যে সীমিত নেই। এই গৌরবোজ্জ্বল দিনটি এখন সারা বিশ্ব জুড়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রূপে পালিত হচ্ছে। এবং আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদের জন্য এই গৌরবোজ্জ্বল দিনটির উদ্যেশেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রচনা ও তার পাশাপাশি এর গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ইতিহাস নিয়ে হাজির হলাম। তবে সবার প্রথমে এই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গুলি একটি টেবিলের মাধ্যমে দেখনি।
কবে পালন করা হয় | ২১ শে ফেব্রুয়ারি |
অন্যান্য নাম | শহীদ দিবস |
ইউনেস্কো দ্বারা স্বীকৃতি পাওয়ার তারিখ | ১৭ ই নভেম্বর, ১৯৯৯ |
আরো পড়ুন:- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কবিতা
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা
বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে মাতৃভাষা হলো মাতৃদুগ্ধের মতনই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা মাতৃদুগ্ধ ছাড়া যেমন একটি শিশু শারীরিক দিক থেকে সঠিক পুষ্টি পাইনা ঠিক তেমনি মাতৃভাষা ছাড়া মানুষ সামাজিক ও মানসিক দিক থেকে পুষ্টি হীন হয়ে যাই। আর এই মাতৃ ভাষা কেই রক্ষা করার জন্য রফিক, জব্বার, শফিউল, সালাম ও বরকতের মতই অনেক শহীদ হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের পটভূমি
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এই প্রেক্ষাপট শুরু হয় মূলত দেশ ভাগের পর অর্থাৎ ১৯৪৭ ভারত পাকিস্তান বিভাজনের পর। বিভাজনের সময় ধর্মের ভিত্তিতে বাংলা ও পাঞ্জাব প্রদেশের বিভাজন করা হয় এবং পূর্ববঙ্গ পূর্ব পাকিস্তান রূপে পাকিস্তানের একটি প্রদেশ হিসাবে গঠন করা হয়।
এরপর ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের রাষ্ট ব্যাবস্থাকে কায়েম করার জন্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ উর্দু ভাষাকে একমাত্র রাষ্ট্র ভাষা হিসাবে চিহ্নিত করার দাবি তুলেন যা পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা ভাষাভাষী নাগরিকরা মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং এই অস্বীকার ১৯৪৮ সালে আন্দোলনের আকার নেই। তবে এই আন্দোলনের সত্বেও ১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী খাজা নজিমুদ্দিন উর্দু ভাষাকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্র হিসাবে ঘোষণা করে দেন এবং এই ঘটনাটির ফলে বাংলা ভাষাভাষীদের আন্দোলন বারুদ আকার ধারণ করে। এরপর ১৯৫২ সালের ২১ শে এই আন্দোলনের সাথে জড়িত আন্দোলন কারীরা সোচ্চার পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারান। এনাদের মধ্যে অন্যতম করেক জন হলেন আবুল বরকত, আব্দুস সালাম, আব্দুল জব্বার ও রফিকুদ্দিন। রাজপথের এই ঘটনাটি বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে ওঠে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি
কানাডার ভ্যানকুভার শহরে বসবাসকারী দুই বাঙালি যথা রফিকুল ইসলাম ও আবদুস সালাম ১৯৯৮ সালে প্রাথমিক উদ্যোক্তা হিসেবে জাতিসঙ্ঘের তৎকালিন মহাসচিব কোফি আন্নান এর কাছে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করার আবেদন জানান। এই প্রেক্ষিতে ১৯৯৯ সালের ১৭ ই নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০০০ সাল থেকে ঐ দিনটি জাতিসঙ্ঘের সদস্য দেশগুলিতে যথাযথ মর্যাদার সাথে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রূপে পালন শুরু হয়। অন্যদিকে ২০১০ সালের ২১ শে অক্টোবর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রূপে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়, যা ১১৩ সদস্য বিশিষ্ট জাতিসংঘের তথ্যবিষয়ক কমিটিতে সর্বসম্মতভাবে পাস হয়।
International Mother Language Day Paragraph In Bengali pdf
International Mother Language Day Essay In Bengali Pdf টি ডাউনলোড করতে নিচের লিংকটিতে ক্লিক করুন।
👇 আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রচনা pdf 👇
সচরাচর জিজ্ঞাস্য প্রশ্ন (FAQ)
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কবে স্বীকৃতি পায়?
১৯৯৯ সালের ১৭ ই নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং ২০১০ সালের ২১ শে অক্টোবর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস রূপে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কবে?
২১ শে ফেব্রুয়ারি।
ইউনেস্কোর কততম সম্মেলনে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়?
ইউনেস্কোর ৩০ তম সম্মেলনে ২১ শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
এবছর ২১ শে ফেব্রুয়ারি বাংলা মাসের কত তারিখ?
৮ই ফাল্গুন (ভারত)।
Final Word
আমাদের ওয়েবসাইটি ভিসিট করার জন্য় ধন্যবাদ, আশা করছি ওপরের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রবন্ধ রচনা গুলো আপনাদের ভালো লেগেছে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্স-এ কমেন্ট করে আমাদের কাজটির প্রশংসা করতে ভুলবেন না।